জেলা প্রশাসক


উইকিমিডিয়া প্রকল্পের অবদানকারীগণ

Article Images

জেলা প্রশাসক

বাংলাদেশের জেলাগুলোর প্রশাসনিক প্রধান কর্মকর্তা

"ডিসি" শিরোনামকে এখানে পুনর্নির্দেশ করা হয়েছে। অন্য ব্যবহারের জন্য ডিসি (দ্ব্যর্থতা নিরসন) দেখুন।

জেলা প্রশাসক বা ডেপুটি কমিশনার বাংলাদেশের জেলার মুখ্য আমলা ও ভূমিরাজস্ব কর্মকর্তা।[] তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ক্যাডারের (যা বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস নামে পরিচিত) গ্রেড-৫[] এর সদস্য ও সরকারের একজন গুরুত্বপূর্ণ আমলা। তিনি একই সাথে ডেপুটি কমিশনার (Deputy Commissioner), জেলা কালেক্টর (District Collector) ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (District Magistrate)। ফলে তিনি ভূমি ব্যবস্থা পরিচালনা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি সমন্বয় সাধন এবং সাধারণ ও স্থানীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে রিটার্নিং অফিসার হিসেবে কাজ করেন। জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের একজন প্রতিনিধি। তিনি তার কাজের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের নিকট জবাবদিহি করেন। জেলাতে সংসদ সদস্যদের পাশাপাশি তিনিও রাষ্ট্রপতি এবং প্রধানমন্ত্রীর সাথে যোগাযোগের অনুমতিপ্রাপ্ত কর্মকর্তা। জেলা প্রশাসক মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অধীন মন্ত্রিপরিষদ সচিব এবং বিভাগীয় কমিশনারের নির্দেশ ও তত্ত্বাবধানে কাজ করেন। বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ক্যাডার হতে পদোন্নতিপ্রাপ্ত সরকারের উপসচিবগণের মধ্য হতে জেলা প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। ওয়ারেন্ট অব প্রিসিডেন্স অনুসারে উপসচিবের পদক্রম ২৫ হলেও জেলা প্রশাসকের পদমর্যাদার ক্রম ২৪। তবে জেলা প্রশাসক শব্দটি ডেপুটি কমিশনার শব্দের বঙ্গানুবাদ নয়, বরং দুটো আলাদা পরিচিতিকে নির্দেশ করে। বর্তমান বাংলাদেশের আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থায় জেলা প্রশাসক শব্দটির প্রয়োগ লক্ষ করা যায়। বিশেষত সরকারি দপ্তরে বাংলা ভাষার ব্যবহার বাধ্যতামূলকভাবে গৃহীত হওয়ার কারণে কেবলমাত্র ডেপুটি কমিশনারের কাজের ক্ষেত্রেই নয়, ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর বা ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেটের সামগ্রিক কাজের ক্ষেত্রে একক বাংলা প্রতিশব্দ হিসেবে জেলা প্রশাসক এর ব্যবহার প্রায়োগিক ক্ষেত্রে প্রচলিত। জেলা প্রশাসক জেলার মুখ্য প্রটোকল অফিসার হিসেবে জেলাতে সফরকারী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর প্রটোকল দেবার দায়িত্ব পালন করেন। জেলা ম্যাজিস্ট্রেটগণ জেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি। ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ হলে ফৌজদারী কার্যবিধি, ১৮৯৮ সংশোধন করে জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের সকল প্রকার বিচারিক ক্ষমতা বৃহৎ কলেবরে নবসৃষ্ট পদ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটকে অর্পণ করা হয়।

জেলা প্রশাসক

বাংলাদেশ সরকারের সীল

সম্বোধনরীতিবিজ্ঞ (জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সম্বোধনকালে)
সংক্ষেপেডিসি
এর সদস্যবাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস
যার কাছে জবাবদিহি করে
আসনজেলা প্রশাসকের কার্যালয়
নিয়োগকর্তাজনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
গঠন১৭৭২
ডেপুটি

অতিরিক্ত ‌জেলা প্রশাসক
অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট

ব্রিটিশ শাসিত ভারতে ১৭৭২ সালে ওয়ারেন হেস্টিংস কর্তৃক প্রথম জেলা কালেক্টরের পদ সৃষ্টি করা হয়। ব্রিটিশ আমলে প্রথম সৃষ্ট পদটির নাম ছিলো ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর। এজন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়কে আজও ঐতিহ্যগতভাবে কালেক্টরেট হিসেবে অভিহিত করা হয়। পরবর্তীতে তাকে দায়িত্ব পালনের প্রয়োজনে ফৌজদারী বিচার ব্যবস্থার ক্ষমতা অর্পণ করা হয় ও ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট নামে আরেকটি পদ দেয়া হয়। পরবর্তীতে পাকিস্তান আমলে District Magistrate বা Collector এর জন্য আরেকটি পদ সৃষ্টি করা হয় জেলার উন্নয়ন কর্মসমূহের সমন্বয় সাধনের জন্য, যার নাম ডেপুটি কমিশনার। ডেপুটি কমিশনার পদ সৃজনের দ্বারা আগের ডিস্ট্রিক্ট কালেক্টর এবং ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট পদ বিলুপ্ত করা হয় নি বা উক্ত পদের জন্য অন্য কাউকে নিয়োগ প্রদান করা হয়নি। ২০০৭ সালের ১ নভেম্বর বিচার বিভাগ পৃথকীকরণ হলে ফৌজদারী কার্যবিধি পরিবর্তন সাধন করে জেলা প্রশাসক হতে বিচারিক ক্ষমতা পৃথক করে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পদ সৃষ্টি করা হয়।

ডিউটিজ অব চার্টার অনুযায়ী জেলা প্রশাসক জেলার ১২০ টি কমিটির সভাপতি। তিনি জেলার পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রতি পনেরদিন অন্তর পাক্ষিক গোপনীয় প্রতিবেদন (Fortnight Confidential Report-FCR) সরকারের নিকট প্রেরণ করেন।

জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কার্যবিধিমালা ১৯৯৬ এর তফসিল ৫ অনুসারে জেলা প্রশাসক নিয়োগ, পদায়ন ও বদলি করে থাকে।[] মন্ত্রিপরিষদ সচিবকে সভাপতি ও জনপ্রশাসন, ভূমি ও স্বরাষ্ট্র সচিবদের সদস্য করে গঠিত কমিটি নিয়োগের কাজ করে। তবে জেলা প্রশাসকদের মূল নিয়ন্ত্রণ করে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

  1. "ডেপুটি কমিশনার"বাংলাপিডিয়া। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৭
  2. "ডিসির বেতন কত?"বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস। সংগ্রহের তারিখ ১৫ এপ্রিল ২০২২
  3. "জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বাবলি"জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। ১৯ মার্চ ২০১৭ তারিখে মূল থেকে আর্কাইভ করা। সংগ্রহের তারিখ ৩০ জানুয়ারি ২০১৭